কপি চাষ - অসময়ে কপি চাষে সাফল্য

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের কৃষক আবদুল বারী অসময়ে এবং আগাম ফুলকপি চাষ করে তাঁর ভাগ্য বদলে দিয়েছেন।

 

আবদুল বারী জানান, পাঁচ বছর বছর ধরে তিনি অসময়ে ফুলকপি চাষ করে আসছেন। ১০ কাঠা জমি ইজারা নিয়ে তিনি কপি চাষ শুরু করেন। কপি চাষ করে লাভের টাকায় তিনি সাত বিঘা জমি কিনেছেন। এই সাত বিঘায় চলছে কপি চাষ। আরও ৫৮ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে সেখানে তিনি অন্যান্য সবজি ও ফসলের আবাদ করছেন। গত বছর তিনি সাত বিঘায় অসময়ে এবং আগাম কপি চাষ করে আয় করেন ১২ লাখ টাকা। এবার তিনি ১৫ লাখ টাকার কপি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী। আগাম চাষ করা ফুলকপি তিনি অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিক্রি করতে পারেন। আর মে থেকে জুলাই পর্যন্ত অসময়ের কপি চাষ করেন।

 

তিনি জানান, একসময় শীতকালে ফুলকপির ব্যাপক চাষাবাদ হওয়ায় সবজির ন্যায্যমূল্য পাওয়া যেত না। এ কারণে তিনি বছর পাঁচেক ধরে অসময়ে ফুলকপির পাশাপাশি আগাম বাঁধাকপি, মুলা, ধনেপাতার চাষাবাদ করছেন।

 

বারী জানান, ২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এসব ফুলকপি হয়। একেকটি ফুলকপি তিনি খুচরা ২৫-৩০ টাকায় এবং পাইকারি ২০ টাকা করে বিক্রি করছেন। অনেক ক্রেতা তাঁর জমি থেকেই কপি কিনে অন্যত্র বিক্রি করছেন। বারী জানান, তাঁর আগাম কপি চাষ দেখে অনেকে আগ্রহ নিয়ে তাঁর খামারে আসছেন চাষাবাদের পদ্ধতি জানতে। তিনি ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ জন কৃষককে অসময়ের কপি চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

 

কপি চাষে সাফল্যের কারণে স্থানীয় কৃষি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বারী সম্মাননা ও বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর খামারে ৪০-৫০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। তিনি আরও বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রম আজ তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে।

 

সাকড়েগাড়ি গ্রামের কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তিনি গত বছর বারীর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক আগাম কপি চাষ করছেন। গত বছর তিনি কপি বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকা আয় করেছেন।

 

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, ফুলকপি মূলত শীতকালীন সবজি। অসময়ে আবাদ করাও সম্ভব। তবে পরিশ্রম একটু বেশি করতে হয়। তিনি জানান, বারীর চাষে সাফল্য দেখে এলাকার ও এলাকার বাইরের অনেক কৃষক এখন অসময়ে কপি চাষ শুরু করেছেন।



HTML Counter © ২০১৩ আলোকিত গ্রামবাংলা
Powered by Ipsita Soft
Loading... Please wait...