চলনবিল অঞ্চলসহ সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন মৌচাষিরা। আর এতে সফলও হয়েছেন তারা। প্রতি বছর এসব অঞ্চল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাষিরা প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা আয় করেন।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানিয়েছে এবার প্রায় ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষার ফুলে ছেয়ে গেছে গোটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভাড়া করা সরিষার ক্ষেত সংলগ্ন স্থানে মৌমাছির বাঙ্গুলো সারি সারিভাবে সাজিয়ে রেখেছে চাষিরা। এ বছর এই অঞ্চল থেকে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব বলে মৌচাষিরা জানিয়েছেন।
মৌ খামারের চাষিরা জানান, প্রতিটি বাঙ্রে চাকে একটি করে রানী মৌমাছি রয়েছে। মৌমাছিগুলো সরিষার মধু আহরণ করে রক্ষিত বাঙ্রে চাকে এনে জমা করে। ৫-৭ দিন পর পর বাঙ্ থেকে চাকগুলো আলাদা করে মধু সংগ্রহ করা হয়। ৫০-৫৫টি বাঙ্রে চাকে গড়ে ৫-৭ মণ করে মধু সংগ্রহ করা যায়। সরিষা মৌসুম ছাড়াও তারা লিচু মৌসুম ও সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করে থাকেন। মৌ-খামারি বুলবুল আহমেদ জানান, তার মৌমাছির খামারে ৯০টি মৌমাছির বাঙ্ রয়েছে। চার বছর ধরে তিনি মৌমাছির খামার গড়ে তুলেছেন।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, চার বছরে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মৌমাছি লালন-পালন ও মধু বিক্রি করে পুঁজি ১০ লাখ টাকায় উপনীত হয়েছে। বর্তমানে মধু বাজারজাত করতে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। দালালচক্রের কাছে মাত্র ১০০ টাকা লিটারে বিক্রি করতে হচ্ছে। দালালরা নামিদামি বিভিন্ন কোম্পানির কাছে অপেক্ষাকৃত অধিক মূল্যে বিক্রি করে তাদের প্রাপ্য মুনাফার সিংহভাগ লুটেপুটে খাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের অভাবে দেশের প্রায় ৫ শতাধিক মৌচাষি তাদের কষ্টার্জিত সংগৃহীত মধুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সরকারিভাবে মৌচাষিদের এসব সমস্যা সমাধানে তেমন কোনো কার্যক্রম না থাকায় ওই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে দেশের মুষ্টিমেয় দালাল চক্র। তাদের দাবি যদি সরকারি সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করা হয় তাহলে তারা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি এ ব্যবসায় খামারিরা আরও উৎসাহী হবেন।