ছাগলকে সাধারনত গরীবের গাভী বলা হয়। যাদের গাভী পালনের সামর্থ নেই তাদেরদ জন্যছাগল পালন লাভজনক হবে পারে। যিনি বেকার তিনিও ছাগল পালন করে রোজগারের পথ খুজে পেতে পারেন। গাভী থেকে একটি বাছুর একই সঙ্গে কমপক্ষে দুটি বাচ্চা দেয়। এ হিসেবে দুটিছাগল থেকে বছরান্তে আটটি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। এদের লালন পালন খরচ অনেক কম। ছাগলের মাংস ও চামড়া দুই-ই উৎকৃষ্ট। শুধু চামড়া রপ্তানি থেকে প্রতি বছর আয় হয় কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। সকল ধর্মবলম্ভী লোকজনের কাছে ছাগলের মাংস সমাদৃত। এছাড়া ছাগলের দুধ পুষ্টিকর, সহজপাচ্য ও একটি উন্নতমানের পথ্য। তাই অল্প পুঁজিতে ছাগল পালন করে আপনিগড়ে তুলতে পারেন পরিবারের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা, একই সঙ্গে প্রানিজ আমিষের ঘাটতি পুরুণকরে দেশের অর্থ- সামাজিক উন্নয়নে রাখতে পারেন বিরাট অবদান।
ছাগল লালন-পালন ও বাসস্থানঃ
- লালন-পালন বা বাসস্থানের জন্য সাধারন ব্যবস্থাই যথেষ্ট।
- ছাগল শুষ্ক আবহাওয়া পছন্দ করে।
- যথেষ্ট আলোবাতাস আছে এবং ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে নয় এমন ঘর হলেই চলবে।
- খামারে আবদ্ধ ঘরে ছাগল পালন করতে হলে পূর্ণ বয়স্ক ছাগলের জন্য প্রায় ১ বর্গ মিটার স্থান প্রয়োজন।
খাদ্য:
ছাগলের জন্য খুব উন্নত মানের খাদ্যের প্রয়োজন নেই। সাধারন মানের ঘাস ও গাছের পাতা থেকে দেহের প্রায় সকল প্রয়োজনমেটানোর ক্ষমতা ছাগলের রয়েছে। খাদ্যের পুষ্টিমান কম হলেও ছাগল পুষ্টিহীনতায় স্বীকার হয়না। কারন ছাগল প্রকৃতিদত্ত্ব গুন হিসেবে খাদ্যমানের অবস্থাভেদে গৃহীত খাদ্যের পরিমাণ কম বেশি করতে পারে এবং সাধারন খাদ্য থেকেই প্রয়োজন পুষ্টি মেটাতে সক্ষম। তবে অধিক উৎপাদনশীল জাতের ক্ষেত্রে সম্পুরক দানাদার খাদ্রের প্রয়োজনীয়তা আছে।
ছাগলের দানাদার খাদ্যের তালিকা নিম্ন রুপঃ-
বাচ্চা সুষম খাদ্য:
এই সুষম খাবার মায়ের দুধের পাশাপাশি দিতে হবে।
- ছোলা শতকরা ২০%
- ভুট্টা শতকরা ২২%
- তিল বা চিনাবাদামের খৈল ৩৫%
- গমের ভুষি ২০%
- খনিজ মিশ্যণ ২.৫%
- লবন ০.৫%
দৈহিক ওজন ভেদে দানাদার খাবারঃ
- ৫ কেজি ওজনের জন্য = ২০০ গ্রাম
- ৬ কেজির ওজনের জন্য = ৩০০ গ্রাম
- ৭ কেজির ওজনের জন্য = ৫০০ গ্রাম
বড় ছাগলের দানাদার খাদ্যঃ-
- ছোলা শাতকরা = ১৫ভাগ।
- ভুট্টা শতকরা = ৩৭ ভাগ।
- তিল বা চিনাবাদামের খৈল= ২৫ ভাগ।
- গমের ভুষি = ২০ ভাগ।
- খনিজ মিশ্রন= ২.৫ ভাগ।
- লবন= ০.৫ ভাগ।
রোগ প্রতিরোধঃ-
- ছাগলের প্রধান শক্রু ঠান্ডা, বিশেষ করে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে হবে।
- পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মতে নিয়মিত টিকা প্রদানের ব্যবস্থা নিতে হবে।
- ক্রিমিনাশক ঔষূধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে।
- কলিজার পাতা কৃমি একটি মারাত্মক রোগ এ রোগের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে ডোবা ও জলাশয়ের ঘাস ছাগলকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
পালনের সুবিধাঃ-
- ছোট প্রানি, দামও কম; তাই প্রাথমিকভাবে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ প্রয়োজন।
- অন্যন্য গবাদি পশুর মতো বিশেষ যত্ন, খাদ্য ও বাসস্থানের প্রয়োজন নেই।
- দেখাশোনার জন্য অতিরিক্ত শ্রমের দরকার পড়ে না বলে যে কেউ লালন-পালন করতে পারে।