জাফরান - মূল্যবান মসলা

এক যুগ আগে পাবনা, রংপুর, গাজীপুর, বান্দরবান এবং ময়মনসিংহে বিএডিসি উদ্যানে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছিল সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতার কারণে ময়মনসিংহে এক যুগেও বিস্তার ঘটেনি বিশ্বের সবচাইতে দামি মসলার ফসল জাফরানের।

 

জানা যায়, প্রাচীন যুগে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে জাফরানের সুগন্ধ ও উজ্জ্বল রঙের গুরুত্ব অনুধাবন করে এর ব্যাপক প্রচলন হয়। জাফরান উদ্ভিদতত্ত্বের দিক থেকে ইরিডাসিয়া ফ্যামিলির অন্তর্গত। আরবী ভাষায় ফারান এবং ইংরেজিতে সাফরন । জাফরানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা ধীরে ধীরে কান্দাহার, খোরাসান,কাশ্মীরের বনেদী মহল ব্যবহারের মাধ্যমে ভারত উপমহাদেশে এর আগমন ঘটে।

 

প্রায় এক যুগ আগে দেশের ৯টি বিএডিসি উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে জাফরানের চাষ শুরু হয়। এগুলো হচ্ছে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা,গাজীপুরের কাশিমপুর,পাবনা,রংপুর,বান্দরবান, জামালপুর,লামা এবং খুলনার দৌলতপুর বিএডিসি সার্ভিস সেন্টার। প্রতিটি বাগানে ১৫/২০টি করে গাছ লাগানো হয়। প্রতিটি গাছের পুষ্পমঞ্জুরিতে প্রায় ২৫/৩০টি করে ফুল ফোটে। বীজ তৈরি হতে সময় নেয় ৭০/৮০ দিন। মটরশুটির ন্যায় ছোট গোলাকার লাল রঙের গাছ প্রতি ২০/৩০টি করে বীজ হয়। প্রতিটি ফুটন্ত ফুলের পুংকেশর এবং স্ত্রীকেশর কাঁচা অবস্থায় কেটে আলাদা করে শুকিয়ে নিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। ৬/৭ ঘণ্টা ভিজিয়ে রং সংগ্রহ করা হয়। আশানুরূপ ফলন পাওয়ার পরও যথাযথ পদক্ষেপ আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এর চাষ হ্রাস পেতে থাকে। অভিজ্ঞ মহল জানান,জাফরান চাষের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রফতানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হতো। জাফরানের উপকারভোগীরা জানান,জাফরানী রং অনুষ্ঠানাদিতে বনেদী পোলাও,বিরিয়ানি,জর্দা,কালিয়াতে ব্যবহার করা হয়। অনেক পানবিলাসী এর পাপড়ি পানের সাথে চর্বণ করেন। জাফরানী রং বিভিন্ন হারবাল ওষুধ প্রস্তুত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার হয় । এর রং নান্দনিক সাজসজ্জায় তথা বনেদী পার্লারগুলোতে মেহেদির সাথে সংমিশ্রণে মোহনীয় উজ্জ্বল রং এর উত্কর্ষ বৃদ্ধিতে ব্যবহূত হচ্ছে। জাফরানী সরবত যে কোন অনুষ্ঠানে পরিবেশন যোগ্য। অভিজ্ঞ মহল জানান,অত্রাঞ্চলের মাটি জাফরান চাষের বিশেষ উপযোগী। তাই নতুন করে হলেও এর দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।



HTML Counter © ২০১৩ আলোকিত গ্রামবাংলা
Powered by Ipsita Soft
Loading... Please wait...