পেঁপে - একরে ২০০ টন

ঝালকাঠিতে টানা বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও পেঁপের চাষ বেড়েছে। পেঁপের বাজার দর ভালো থাকায় এবং লাভজনক হওয়ায় ঝালকাঠির অনেক কৃষক পেঁপে চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। জোয়ারের পানি থেকে গাছ বাঁচাতে উঁচু জমিতে কান্দি কেটে পেঁপে চাষ করছেন কৃষকরা। এ বছর চাষিরা একর প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টন পেঁপে উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন। পাশাপাশি পেঁপের কান্দির নালায় মাছ চাষ করেও কৃষকগণ পরিবারে সচ্ছলতা এনেছেন।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পেঁপে বাগান তৈরি করার পর থেকে ফলন শুরু হলে সারা বছরই ফল তোলা যায়। প্রতি মাসে চাষিরা কমপক্ষে দুই-তিনবার ফল তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারেন। ঝালকাঠি জেলায় এ বছর ৫০০ একর জমিতে পেঁপের চাষ হয়েছে। একর প্রতি উৎপাদন প্রায় ২০০ টন। এসব পেঁপে গাছ ১০ থেকে ১২ বছর একনাগাড়ে ফল তোলার পরে তা কেটে ফেলা হয়। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে খুচরা ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে এবং পাইকারি ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঝালকাঠি জেলার চারটি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় পেঁপের চাষ বেশি হয়।

 

ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম পাঁচ বছর ধরে পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়েছেন। এ বছর তিনি চার বিঘা জমিতে কান্দি কেটে পেঁপে ও মাছের চাষ করেছেন। শহিদুল ইসলাম কান্দিতে পেঁপে বাগান এবং নালায় মনোসেক্স তেলাপিয়া ও কার্পজাতীয় মাছের চাষ করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি পাঁচ বছর আগেও বেকার ঘুরে বেড়াতাম। কৃষি বিভাগের পরামর্শে একই সঙ্গে পেঁপে ও মাছের চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার বেকারত্ব ঘুচে গেছে।'

 

ঝালকাঠির গাভারামচন্দপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম এ হান্নান জানান, পেঁপে চাষ লাভজনক এবং পেঁপের বাগানের কান্দিতে মাছের চাষও করা যায়। পেঁপে চাষের খরচ মাছের আয় দিয়েই পুষিয়ে নেওয়া যায়। এতে পেঁপে চাষিরা অধিক লাভবান হতে পারেন।

 

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মুজিবুল হক মিয়া বলেন, উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠি। এখানে টানা বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগে রয়েছে। তার পরও কৃষকরা থেমে যাননি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে অনেকেই এখন জমিতে কান্দি তৈরি করে পেঁপে চাষ করছেন। একই সঙ্গে কান্দিতে পেঁপে এবং নালায় মাছ চাষ করে অনেকেই সফলতা পেয়েছেন। এ ধরনের চাষ সম্প্রসারণ হলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি সাধারণ মানুষের চাহিদাও পূরণ হবে।



HTML Counter © ২০১৩ আলোকিত গ্রামবাংলা
Powered by Ipsita Soft
Loading... Please wait...