বাটা মাছ - প্রণোদিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল
- ব্রড প্রতিপালন : বাটা বা রেবা মাছের প্রজননকাল এপ্রিল-আগষ্ট মাস। প্রজননের ৩-৪ মাস পূর্বে সুস্থ-সবল ব্রড মাছকে ২৫% আমিষ সমৃদ্ধ সম্পুরক খাবার প্রয়োগে প্রতিপালন করতে হবে। খাবার হিসাবে চাউলের কুঁড়া, সরিষার খৈল, ফিশ মিল ও ভিটামিন একত্রে মিশ্রিত করে মাছের দেহ ওজনের ৩-৫% হারে দৈনিক ২-৩ বারে পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরে প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি সপ্তাহে শতাংশ প্রতি ৪-৫ কেজি গোবর এবং ইউরিয়া ও টিএসপি সার ১০০ গ্রাম হারে প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরে নিয়মিতভাবে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
- বাটা মাছের প্রজননের জন্য হরমোন ইনজেকশন দেয়ার ৬-১০ ঘন্টা পূর্বে ব্রড মাছ ধরে সতকর্তার সাথে হ্যাচারিতে সিমেন্ট সিষ্টার্নে স্থানান্তর করে পানির ফোয়ারা দিতে হবে।
- স্ত্রী ও পুরষ উভয় মাছকে একবার করে হরমোন ইনজেকশন দিতে হয়। সাধারনত স্ত্রী মাছকে প্রতি কেজিতে ৪-৬ মিলিগ্রাম হারে এবং পুরষ মাছকে ১-২ মিলিগ্রাম হারে পিজি দ্রবন হরমোন হিসেবে দেয়া হয়।
- ইনজেকশন দেয়ার পর পুরষ ও স্ত্রী মাছকে ১:১ অনুপাতে সিষ্টার্নে রেখে পানির কৃত্রিম প্রবাহ দিতে হবে।
- ইনজেকশন দেয়ার ৮-৯ ঘন্টা পর সাধারণতঃ চাপ প্রয়োগ পদ্ধতি বা নিয়ন্ত্রিত পানি প্রবাহের প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়। ডিম দেয়ার পর ব্রড মাছগুলোকে সর্তকর্তার সথে সিষ্টার্ন থেকে তুলে ১ পিপিএম পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণে গোসল করিয়ে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।
- নিষিক্ত ডিম হ্যাচারিতে ফানেল ইনকুবেটর বা বোতল জারে পানির প্রবাহ দিয়ে ডিম ফোটানো হয়।
- তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে ১৪-১৬ ঘন্টা পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
- ডিম ফুটার ২-৩ দিন পর রেণুকে ডিমের কুসুম খাবার হিসাবে দিতে হয়।
পোনা প্রতিপালন
- বাটা মাছের নার্সারি পুকুরের আয়তন ২৫-৩০ শতাংশ ও গভীরতা ১-১.৫ মিটার হলে ভাল হয়।
- সঠিক পদ্ধতিতে নার্সারি পুকুর প্রস্তুত করার পর প্রতি শতাংশে ১০,০০০-১৫,০০০ টি পোনা (৫-৭ দিন বয়স) মজুদ করা যায়।
- প্রাথমিকভাবে ৫ দিন রেণু পোনার মোট ওজনের দ্বিগুন হারে এবং পরবর্তী ৫ দিন অন্তর অন্তর পোনার মোট ওজনের যথাক্রমে ১৫, ১০ ও ৫% হারে বাণিজ্যিক নার্সারি খাবার অথবা সম্পুরক খাবার দিতে হয়।
- বরাদ্দকৃত খাবার দিনে ২-৩ বারে পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে।
- নার্সারি পুকুরে ২৫-৩০ দিন পোনা প্রতিপালনের পর চাষের পুকুরে ছাড়ার উপযুক্ত হয়।