মুরগির ডিমে কোটিপতি পটিয়ার সেলিম

পিরামিড খাঁচা পদ্ধতিতে মুরগি পালন


মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন

শুধু নিজ খামারের মুরগির ডিম বিক্রি করেই এখন কোটিপতি পটিয়ার সেলিম উদ্দিন। উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম হাইদগাঁও গ্রামের মৃত সামশুদ্দীন মাষ্টারের ছেলে সেলিম লেয়ার মুরগির খামার করে এখন সফল। তার খামারে পিরামিড খাঁচা পদ্ধতিতে মুরগি পালন করা হয়। এ পদ্ধতিতে অল্প জায়গায় বেশি মুরগি পালন করা হয়। লাভজনক হওয়ায় তার দেখাদেখি পটিয়ায় অনেক খামারি পিরামিড খাঁচা পদ্ধতিতে লেয়ার মুরগি পালন শুরু করেছেন। স্থানীয় হাইদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, সেলিম একজন কর্মঠ লোক। সেলিম উদ্দিন মুরগির খামার প্রতিষ্ঠা করে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও অবদান রাখছে।
কথা বলে জানা যায়, সেলিম উদ্দিন পাটজাত পণ্যের একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান। ২০১০ সালের শেষের দিকে জুটমিলের মহাব্যবস্থাপকের দামী চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজ উদ্যোগে ৭০ শতক জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন লিজা পোল্টি ফার্ম নামের লেয়ার মুরগি পালনের খামার। এখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক তাকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ দেয়। তার খামারে চারটি শেডে ১৬ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রতিটি মুরগি দৈনিক ১১৫ গ্রাম খাবার খায়। খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ১৪ হাজার ডিম পাওয়া যায়। প্রতিদিন ডিম বিক্রিতে আয় এক লাখ ১৬ হাজার টাকা। খামারের মুরগির খাদ্যের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন এসএস পোল্ট্রি ফিড নামের মুরগির খাদ্য প্রস্তুতকারী কারখানাও। তার খামারে মুরগির বিষ্ঠায় তৈরি হচ্ছে বায়োগ্যাসও।
এ সময় সেলিম উদ্দিন জানান, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'পশু পাখি পালন ও চিকিৎসা' বিষয়ক ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। ডিম পাড়ার উপযুক্ত একটি লেয়ার মুরগির দাম পড়ে চার শত টাকা। একটি মুরগি ১৮ মাস ডিম দেয়। ডিম পাড়ার অনুপযোগী মুরগিও বাজারে ভালো মূল্যে বিক্রয় করা যায়। বর্তমানে তার খামারে ১০ জন শ্রমিক কাজ করে। তিনি নিজেও খামারে মুরগির পরিচর্যা করেন। খামারে দৈনিক শ্রমিকের মজুরি ২ হাজার ৫০০ টাকা, ওষুধ খরচ দুই হাজার টাকা, খাদ্য খরচ ৬৮ হাজার টাকা, ব্যাংক সুদ ৪ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল ২০০ টাকা। সবমিলিয়ে দৈনিক খরচ ৮০ হাজার টাকার নিচে।
এক পর্যায়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, এ খামার থেকে গত ২০১১-১২ অর্থবছরে তার ৫৪ লাখ টাকা আয় হয়েছে। গত দুই/এক বছর থেকে মুরগির ডিমের বাজারমূল্য বেড়ে যাওয়ায় তার সোনায় সোহাগা হয়েছে। পটিয়া বিসিকসহ চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠিত বিস্কুট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে তার কাছ থেকে ডিম নিয়ে যায়।
পিরামিড খাঁচা পদ্ধতিতে লেয়ার মুরগি পালন বিষয়ে পটিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদক কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র জানান, এ পদ্ধতিতে মুরগি পালনে সহজে বিষ্ঠা পরিষ্কার হয়ে যায়। মুরগির গায়ে বিষ্ঠা না লাগার কারণে মুরগির রোগব্যাধি কম হয়। অল্প জায়গায় বেশি মুরগি পালন করা যায় বলে এটি লাভজনক ।



HTML Counter © ২০১৩ আলোকিত গ্রামবাংলা
Powered by Ipsita Soft
Loading... Please wait...