বোরো মৌসুমে ক্ষেতে সেচ দেয়া অধিক ফলন পাওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত। তাইতো প্রতিবছরই কৃষকদের দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হয়, ডিজেলের দাম বাড়ে কিনা, সময়মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যায় কিনা, এসব নিয়ে। জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের লাগামহীন দাম বৃদ্ধি এবং অনিশ্চিত সরবরাহের কথা মাথায় রেখে কৃষকদের জমিতে সেচ দিতে রীতিমত হিমসিম খেতে হয়।
কৃষকদের এসব সমস্যা ও দুশ্চিন্তার কথা বিবেচনা কওে গ্লোবাল গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে দেশে প্রথমবারের মতো সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে পাম্পের সাহায্যে জমিতে সেচ দেয়ার প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলো বাকৃবির পার্শ্ববর্তী গৌরীপুর উপজেলার উজান কাশিয়ার চর গ্রামে।
এ সময় 'সেচকার্যে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রফেসর ড. আব্দুল মোমেন মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহসীন উদ্দিন খান, গ্লোবাল গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের চেয়ারম্যান গো হান কিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবায়নযোগ্য শক্তি বিভাগের প্রফেসর সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, "সেচকার্যে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকদের আর ডিজেল এবং বিদ্যুৎ নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করতে হবে না। তাছাড়াও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা খুব সাশ্রয়ী ও লাভজনক। এই পদ্ধতিতে সেচ দিলে প্রতি ঘণ্টায় ছয় হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে, লাগবে না কোন ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ।" বক্তারা আরো বলেন, "সৌর প্যানেল, কন্ট্রোলার এবং পাম্পসহ পুরো সেটের দাম পড়বে ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা যা একজন কৃষকের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। তাই কৃষকরা সমবায়ের মাধ্যমে ১০-১২ মিলে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও সরকার এ খাতে সাবসিডি দিলেও কৃষকরা অনেক উপকৃত হবেন। এতে দেশে ধানের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে সেচের প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল হক।